“দুনিয়ার সর্বোত্তম সম্পদ নেককার স্ত্রী” – এটি একটি হাদিসের উক্তি (বর্ণিত ইবনে মাজাহ, সহিহ বুখারি ও মুসলিমে ভিন্ন শব্দে), যা ইসলামে একজন সৎ ও ধর্মনিষ্ঠ স্ত্রীর অপরিসীম মূল্য তুলে ধরে। এখানে এর তাৎপর্য ও শিক্ষা বিশ্লেষণ করা হলো:
📜 হাদিসের উদ্ধৃতি:
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন:
“দুনিয়ার জীবন সুখ-সমৃদ্ধির জীবন। আর দুনিয়ার সর্বোত্তম সম্পদ হলো নেককার স্ত্রী।”
(সহিহ মুসলিম: ১৪৬৭, ইবনে মাজাহ: ১৮৫৫)
💫 নেককার স্ত্রীর গুণাবলী (কুরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী):
১. আল্লাহভীরু ও ইবাদতময়:
-
নামাজ, রোজা, দান-সদকায় নিষ্ঠাবান।
-
স্বামীর অনুপস্থিতিতে নিজের ও পরিবারের ইজ্জত-ধর্ম রক্ষা করে (সূরা নিসা: ৩৪)।
২. স্বামীর আনুগত্যকারিণী:
-
শরিয়তের সীমার মধ্যে স্বামীর প্রতি অনুগত (সূরা বাকারা: ২২৮)।
-
সংসার ও সন্তানের দেখাশোনায় সচেষ্ট।
৩. স্বামীর সম্পদ ও সম্মানের রক্ষক:
-
স্বামীর সম্পদ অপচয় বা অপব্যয় না করা।
-
তার সম্মান ও গোপনীয়তা রক্ষা করা।
৪. ধৈর্যশীল ও কৃতজ্ঞ:
-
সংসারের দুঃখ-কষ্টে ধৈর্য ধারণ।
-
স্বামীর ভালো কাজের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ।
৫. সুন্দর চরিত্র ও আচরণ:
-
মিষ্টি ভাষণ, নম্র আচরণ, বিবাদ এড়ানো (সহিহ বুখারি: ৩০৩৫)।
🌟 কেন তিনি “সর্বোত্তম সম্পদ”?
-
আধ্যাত্মিক শান্তি: তার ইবাদত স্বামীর জন্যও পুণ্যের কারণ হয়।
-
স্থিতিশীল পরিবার: সৎ স্ত্রী সংসারে শান্তি, প্রেম ও ভারসাম্য বজায় রাখেন।
-
সন্তানের সুশিক্ষা: নেককার মা সন্তানকে সৎ ও জ্ঞানী করে গড়ে তোলেন।
-
দুনিয়া ও আখিরাতের সফলতা: পারিবারিক শান্তি দুনিয়ার সৌভাগ্য ও আখিরাতের নাজাতের মাধ্যম।
⚖️ স্বামীর দায়িত্ব:
একজন “নেককার স্ত্রী” পেতে স্বামীকেও হতে হবে:
-
ন্যায়পরায়ণ: স্ত্রীর অধিকার (আর্থিক, শারীরিক, মানসিক) আদায়ে সচেষ্ট।
-
সদাচারী: রাসূল (ﷺ)-এর আদর্শে তার সাথে স্নেহ ও সম্মানের সহিত আচরণ।
-
দায়িত্বশীল: স্ত্রীর ধর্মীয় চর্চায় সহায়ক ও সংসারের দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়া।
📌 চূড়ান্ত শিক্ষা:
একজন নেককার স্ত্রী শুধু সঙ্গীনি নন, তিনি:
-
স্বামীর জন্য দুনিয়ার সেরা নেয়ামত,
-
সন্তানের জন্য প্রথম শিক্ষক,
-
সমাজের জন্য ভিত্তিপ্রস্তর।
তাকে লাভ করাই জীবনের সফলতা।
🌿 দোয়া:
“হে আল্লাহ! আমাদেরকে নেককার স্ত্রী/স্বামী দান করুন, এবং আমাদের সন্তানদেরকে আমাদের জন্য নেককার বানিয়ে দিন।” (সূরা ফুরকান: ৭৪)